প্রত্যাশা গাজাবাসীর নতুন বছরে ফিরবে শান্তি

প্রত্যাশা গাজাবাসীর নতুন বছরে ফিরবে শান্তি

প্রায় তিন মাস ধরে গাজা উপত্যকায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২২ হাজার ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও ৫৬ হাজার মানুষ। ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছেন গাজার অধিকাংশ ফিলিস্তিনি। তিন মাস হলেও যুদ্ধ থামার দৃশ্যমান কোনো লক্ষণ নেই। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষের মতো গাজাবাসীও নতুন আশায় নববর্ষ বরণ করেছেন। তাদের প্রতাশ্যা একটাই—নতুন বছরে ফিলিস্তিনে শান্তি ফিরবে। পরিবার সঙ্গে নিয়ে নিরাপদে বসবাস করতে পারবেন। খবর রয়টার্সের।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের বাসিন্দা আবু আবদুল্লাহ আল-আঘা। ইসরায়েলি বিমান হামলায় তার তরুণ ভাতিজি ও ভাতিজার প্রাণ গেছে। বাড়িঘরও মাটির সঙ্গে মিশে গেছে মধ্য বয়সী আবদুল্লাহর। তিনি বলেন, ২০২৪ সালে আমি আমার বাড়ির ধ্বংসাবশেষে ফিরতে চাই। সেখানে একটা তাঁবু খাটিয়ে বসবাস করতে চাই। আমি চাই আমাদের সন্তানরা যেন শান্তি ও নিরাপদে বসবাস করতে পারে, স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারে এবং শ্রমিকরা কাজে যাবে। তাদের আয়ের একটা ব্যবস্থা হবে।

হামাসের হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচারে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এরই মধ্যে ২১ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৫৬ হাজার ১৬৫ জন ফিলিস্তিনি। এ ছাড়া নিখোঁজ হয়েছেন আরও কয়েক হাজার মানুষ।

হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রথম দিকে ইসরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজায় হামলা চালায়। ফলে ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে অধিকাংশ ফিলিস্তিনি দক্ষিণ গাজায় এসে আশ্রয় গ্রহণ করেন। সম্প্রতি দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তাদের দাবি, শহরটিতে শক্ত ঘাঁটি গেড়ে বসেছে হামাস। ফলে বর্তমানে অধিকাংশ ফিলিস্তিনি মিসরের সীমান্তবর্তী রাফাহ শহরে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন তারা।

হামাস-ইসরায়েলের এই যুদ্ধ রাজনৈতিকভাবে সমাধান হবে এমন প্রত্যাশা খুব কম। ৭৫ বছর ধরে ফিলিস্তিনিরা যে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখছেন সেটাও আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে কঠিন হয়ে উঠেছে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুজান খাদের নামে এক ফিলিস্তিনি নারী বলেন, নতুন বছরে যুদ্ধের অবসান হবে। অক্টোবরে আমাদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর থেকে আমরা সড়কে তাঁবু ফেলে বসবাস করছি। আমাদের পুরো জীবনটাই এখন সড়কের ওপর। আমরা রাস্তায় খাই, রাস্তায় বাস করি, রাস্তায় মারা যাই, এমনকি আমাদের বাচ্চারাও রাস্তায় আছে। আমরা সবাই ঘরবাড়ি ছাড়া। ২০২৩ সালে আমাদের অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে।

ইসরায়েলি হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বিড়ালছানার সঙ্গে খেলতে খেলতে ১২ বছর বয়সী মুনা আল-সাওয়াফ বলেছে, আমার আশা ২০২৪ সালে সব কিছু ঠিক হয়ে যায়। আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চাই। আমরা কাপড়-চোপড় পরব, আবার কাজ করব, আমাদের বাড়িঘরগুলো পুনরায় নির্মাণ করা হবে।

More News...

আফগানিস্তানে বন্যা: নিহত বেড়ে ৩১৫

ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে ইউরোপের যেসব দেশ