ড. ইউনূস- জো বাইডেন বৈঠক, উচ্ছ্বসিত প্রবাসীরা

ড. ইউনূস- জো বাইডেন বৈঠক, উচ্ছ্বসিত প্রবাসীরা
দীর্ঘ তিন দশক পর বাংলাদেশ সরকারপ্রধানের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বৈঠকের খবরে আনন্দ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিরল এই বৈঠককে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বলে জানিয়েছে প্রবাসের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

তারা জানিয়েছে, মাত্র এক মাসের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক একটি নজিরবিহীন ঘটনা। এই বৈঠকই প্রমাণ করে আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কতটুকু গভীর হবে।

বৈঠকের শুরুতেই বাইডেন-ইউনূসের আলিঙ্গনের ছবি এবং ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় কিছুক্ষণের মধ্যেই। 

নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের বাঙালি পাড়া থেকে শুরু করে কূটনৈতিক মহলেও আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল দুই নেতার ঐতিহাসিক এই বৈঠক। প্রবাসীরা আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের যেসব দাবি ছিল, তা পূরণ হতে সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর সেটা ড. ইউনূসের নেতৃত্বেই সম্ভব।

বাংলাদেশ সোসাইটি ইউএসএর সভাপতি আব্দুর রব মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘তিন দশকেরও বেশি সময় পর কোনো বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এটা বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের জন্য গর্বের। ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশ সংস্কারের দায়িত্ব নিয়েছেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। এ বৈঠকের খবরে প্রবাসীরা আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত।

তিনি বলেন, ‘বহু বছর ধরে আমরা ছিলাম শোষিত, সেই অবস্থায় তিনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) দায়িত্ব নেওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি কমিউনিটির এই শীর্ষ নেতা আরো বলেন, ‘সারা বিশ্বে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। সেটাকে কাজে লাগিয়ে তার হাত ধরেই দেশ আরো এগিয়ে যাক, এটাই প্রবাসীদের প্রত্যাশা।’

নিউ ইয়র্কের লংআইল্যান্ডের বাসিন্দা বিজ্ঞানী ড. আবু সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ববরেণ্য একজন ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী। তার সঙ্গে বিশ্ব নেতাদের সম্পর্ক কেমন সেটা মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের ছবিটি দেখলেই বোঝা যায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেভাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গলা জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করেছেন, এটা স্রেফ কূটনৈতিক আলিঙ্গন নয়, এটা মনে হয়েছে দীর্ঘদিনের পুরনো দুই বন্ধুর ভালোবাসার আলিঙ্গন। এই ছবিটিই প্রমাণ করে শুধু ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কারণেই আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কেমন হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে কতটুকু সাহায্য করতে প্রস্তুত।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকার দেশে সংস্কার শেষে সুন্দর একটি পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করবে। দেশ এবং দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক, এটাই প্রবাসীদের চাওয়া।’

বাংলাদেশি-আমেরিকান ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির সভাপতি কাজী আজম কালের কণ্ঠকে জানান, তিন দশক পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। জাতিসংঘের অধিবেশনে বিশ্বনেতারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ওয়েলকাম করেছেন। এর আগে সরকারপ্রধান জাতিসংঘের অধিবেশনের ফাঁকে হাঁটা পথে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা হলে, সেটা বৈঠক বলে চালিয়ে দিতেন।’