গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আফগানিস্তানে অস্বাভাবিক ভারী বৃষ্টিপাতের কারনে সৃষ্টি হওয়া আকস্মিক বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন এক হাজার ৬০০ জন।
মূলত আফগানিস্তান একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। জাতিসংঘ জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ তার মধ্যে আফগানিস্তান অন্যতম।
গ্রামবাসী নিহতদের দেহ সমাধিস্থ করছে এবং সাহায্য সংস্থাগুলো বিপর্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করেছে। তালেবান চালিত শরণার্থী মন্ত্রণালয় বলেছে, ইতিমধ্যে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গবাদি পশু নিশ্চিহ্ন হয়েছে।
অন্যদিকে সহায়তা গোষ্ঠীগুলো স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা এবং পানি সরবরাহের মতো অত্যাবশ্যক অবকাঠামোর ক্ষতির বিষয়ে সতর্ক করেছে। রাস্তাগুলো কাদায় ঢেকে আছে।
বাঘলান প্রদেশের নাহরিন জেলার বাসিন্দারা মৃতদেহগুলো একটি কবরস্থানে নিয়ে যায়। পরিবারের ১৩ সদস্যকে হারানো মুহাম্মদ ইয়াহকুব বলেন, ‘আমাদের খাবার নেই, পানি নেই, আশ্রয় নেই, কম্বল নেই, কিছুই নেই, বন্যা সব কিছু ধ্বংস করেছে।’
এক বিবৃতিতে তালেবানের অর্থনীতি মন্ত্রী দিন মোহাম্মদ হানিফ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘ, মানবিক সংস্থা এবং বেসরকারি ব্যবসাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সেভ দ্য চিলড্রেনের আফগানিস্তানের পরিচালক আরশাদ মালিক বলেন, ‘জীবন ও জীবিকা ভেসে গেছে। আকস্মিক বন্যা গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে, ঘরবাড়ি ভেসে গেছে এবং গবাদিপশু মারা গেছে।’
বিভিন্ন স্থান থেকে বেসামরিক নাগরিক আটকে পড়ার খবর আসার পর উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য হেলিকপ্টার পাঠায় তালেবান সরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, বন্যায় অসংখ্য মানুষ গৃহহীন হয়েছে পড়েছেন। ভেঙে পড়েছে যাতায়াত ব্যবস্থাও। তাছাড়া পানি সরবরাহ ব্যবস্থায়ও মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আফগানিস্তান অফিস জানিয়েছে, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক। ঘটছে হতাহতের ঘটনাও।
দেশটির প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রধান কর্মকর্তা হেদায়াতুল্লাহ হামদার্দ জানিয়েছেন, মৌসুমি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতি হতে পারে এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন আগে থেকে প্রস্তুত ছিল না।