সরকারের অর্জনগুলো নস্যাৎ করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে এ ব্যাপারে নেতাকর্মীদের চোখ-কান খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন সরকারপ্রধান।
বুধবার (১৭ মে) বিকেলে গণভবনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাতে যাওয়া দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে একটা গভীর ষড়যন্ত্র চলতেই থাকবে। যেন আমাদের অর্জনগুলো নস্যাৎ হয়ে যায়। এ ব্যাপারে দেশের জনগণকে সজাগ থাকতে হবে, আপনাদের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।’
বিরোধী দলের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ভোট ডাকাত ছিল তারাই এখন গণতন্ত্র চায়, ভোটের অধিকারের কথা বলে, যাদের জন্ম হয়েছে অবৈধভাবে তাদের কাছ থেকে শুনতে হয় এই সমস্ত কথা। মাঠের কথা মাঠে থাকবে, আমরা জনতার সঙ্গে থাকব। জনতার পাশে থাকব। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করব, জনগণের জন্য কাজ করব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেখানে ভুয়া ভোট দিয়ে ভোটার তালিকা হতো, সেখানে ছবিসহ ভোটার তালিকা, আইডি কার্ড, যতটুকু সংস্কার, মানুষের আস্তা বিশ্বাস অর্জন, এগুলো তো আওয়ামী লীগই করেছে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সও করে দিয়েছি আমরা। তারপরও কেউ যখন গণতন্ত্র, নির্বাচন ও ভোট নিয়ে ছবক দিতে আসে আমাদের, সেখানে বলার কিছু থাকে না।’
নিজের দেশে ফেরার স্মৃতিচারণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘যেদিন ফিরে আসি সেদিন তো আর চেনা মুখগুলো পাইনি, কিন্তু পেয়েছিলাম এদেশের জনগণকে, আর আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীকে, সেই থেকে আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ আর বাংলাদেশের জনগণ আমার পরিবার। আমি সেভাবেই নিয়েছি। আজকে আমি বলব, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি এটাকে ধরে রেখে বাংলাদেশে এগিয়ে নিতে হবে। এই প্রতিজ্ঞা নিয়েই চলতে হবে।’
দলকে শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে, মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। পাশাপাশি উন্নয়নের গতি যাতে ত্বরান্বিত হয় তার ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের সংগঠন, জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাবে, এটিই আমাদের একমাত্র প্রতিজ্ঞা। কাজেই জাতির পিতার যে স্বপ্ন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি, জাতির পিতার সোনার বাংলা ইনশাল্লাহ আমরা গড়ে তুলব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সততা থাকলে পরে, আর উদ্দেশ্যটা যদি সৎ হয়, তাহলে যেকোনো ক্ষেত্রে সাফল্য আনা যায়। এই কথাটা সবসময় মনে রাখি। লক্ষ্য একটাই, দেশের মানুষের জীবনটা উন্নত করে দেওয়া। তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করে দেওয়া। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চেয়েছেন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। সেই হাসি ফোটানো একমাত্র কর্তব্য। সেটা আমরা করে যাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির শীর্ষ নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগ ছাড়াও এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা দলীয়প্রধানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।