নির্বাচনে বিএনপি পূর্ণ শক্তি নিয়ে অংশগ্রহণ করুক: তথ্যমন্ত্রী

নির্বাচনে বিএনপি পূর্ণ শক্তি নিয়ে অংশগ্রহণ করুক: তথ্যমন্ত্রী

‘আমরা নির্বাচনের মাঠে সবার সাথে খেলে জিততে চাই আর বিএনপি শুধু পালিয়ে যেতে চায়। তাদেরকে বলব মাঠ থেকে পালিয়ে না যাওয়ার জন্য।’ এমন মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব গতদিন বলেছেন, আওয়ামী লীগ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায়। প্রকৃতপক্ষে আমরা কখনো ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চাই না। আমরা চাই আগামী নির্বাচনে বিএনপি পূর্ণ শক্তি নিয়ে অংশগ্রহণ করুক।

কিন্তু বিএনপির কথাবার্তায় মনে হচ্ছে যে, নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে তারা মাঠ ছেড়েই চলে যেতে চাচ্ছে। মির্জা ফখরুল সাহেবকে বলব মাঠে আসার জন্য এবং আমাদের সাথে খেলার জন্য। আমরা খেলেই জিততে চাই। আমরা চাই সকল রাজনৈতিক দল আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ আগামী দিনের সরকার নির্বাচিত করুক।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের আমূল পরিবর্তন ঘটেছে, প্রতি শহর-গ্রামের এবং মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে, মানুষের মুখে আগের ডাল-ভাতের পরিবর্তে এখন মাংসের দাম বাড়লে সেটি নিয়ে কথা শোনা যায়।

আগে মানুষ ইট বিছানো রাস্তার দাবি দিত, এখন কার্পেটিং করা রাস্তার দাবি দেয়। এখন মানুষ ভাত-কাপড়ের কথা বলে না, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের কথা বলে এবং আমাদের সরকার সেটি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত করেছে, দেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। মানুষের জীবনমানের এই উত্তরণ ও পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে জনগণের ওপর আমাদের আস্থা আছে বিধায় আমরা সবার সাথে নির্বাচনের মাঠে খেলে জিততে চাই আর বিএনপি শুধু পালিয়ে যেতে চায়।’

সরকার বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য সংলাপের ডাক দেবে কি না-এ প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন আয়োজক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের মাঠে আমরা একটা পক্ষ। আমরা তো আয়োজক পক্ষ নই। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে তাদের যদি কোনো অভাব-অভিযোগ কিছু থাকে তারা নির্বাচন কমিশনের সাথে কথা বলতে পারে। আর নির্বাচন কমিশন যদি আমাদের ডাকে তাহলে আমরা সেখানে যাব।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব। ২০১৮ সালে নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছিল পরে সেটিকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল, এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করব এ নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবে। মির্জা ফখরুল সাহেব সম্প্রতি বলেছেন-“কথা বেশি নয়, কথা একটাই, এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে”। কিন্তু আসলে আগামী নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশগ্রহণ না করে তাহলে মির্জা ফখরুল সাহেবের নিজের পতন এবং বিএনপির পতন দুটিই অবলোকন করবেন।’

বিএনপি নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগ কি ব্যবস্থা নেবে এবং বিএনপি ছাড়া নির্বাচন কতটা গ্রহণযোগ্য হবে-এ প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিহত করার ক্ষমতা বিএনপির নাই। ২০১৪ সালে আমরা তাদেরকে মোকাবিলা করেছি, ২০১৪ সালের পরিস্থিতি বিএনপি আর কখনো সৃষ্টি করতে পারবে না। নির্বাচনে অবশ্যই সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক আমরা সেটিই চাই। কিন্তু গণতন্ত্রে জনগণের অংশগ্রহণটাই হচ্ছে মুখ্য।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭০ সালে নির্বাচনের সময় মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে স্লোগান দেওয়া হয়েছিলো ‘ভোটের বাক্সে লাথি মার, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’। অথচ ১৯৭০ সালে সেই নির্বাচন না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। তখন অনেক রাজনৈতিক দল সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নাই কিন্তু জনগণ ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেছে এবং দেশ স্বাধীন হয়েছে।

গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি এবং তাদের মিত্ররা অংশগ্রহণ করে নাই তবুও ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। আমরা চাই বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। কিন্তু সেখানে জনগণের অংশগ্রহণটাই হচ্ছে মুখ্য। জনগণের অংশগ্রহণ থাকলে সেই ভোট নিশ্চয়ই গণতন্ত্রের বিচারে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।’

More News...

দেশবাসী ও সমর্থকদের সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন তারেক রহমান

জনগণের নির্বাচিত সরকার না হলে কোনো খাতে সংস্কার সম্ভব নয়: তারেক রহমান