সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ শুরু করেন তারা।
এদিকে এই কর্মসূচির কারণে অসংখ্য যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন আটকে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও সংশ্লিষ্টরা। এদিকে ঘোষিত চার দফা দাবি বাস্তবায়িত না হলে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
তাদের দাবিগুলো হলো-
প্রথমত ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, যাদের কোটা আছে জীবদ্দশায় একবারই কোটা ব্যবহার করতে পারবে।
তৃতীয়ত, প্রতি ১০ বছর পর পর জনশুমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমীক্ষা করতে হবে যাতে আমরা বুঝতে পারি কোটার প্রয়োজনীয়তা কেমন এবং কোটার মূল্যায়ন করা। চতুর্থত, দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
আন্দোলনে আসা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান বলেন, বাংলাদেশে চাকরির বাজারে ৫৬ শতাংশ কোটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। এ কোটার কারণে আমাদের মত অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ভেঙে যায়। আমরা চাই স্বাধীনতার এত বছর পর একটি সুন্দর ও বৈষম্যমূলক সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হোক।
গণিত বিভাগের আরেক ছাত্র রকিবুল ইসলাম বলেন, আমাদের দাবি হচ্ছে সব ধরনের চাকরি থেকে কোটা প্রথার অবসান করা হোক। একজন মেধাবী শিক্ষার্থী কঠোর পরিশ্রম করেও চাকরি পাচ্ছে না, অপরদিকে একজন কোটাধারী অল্প নাম্বার পেয়েও চাকরিতে যোগদানের সুযোগ পাচ্ছেন। যা সম্পূর্ণভাবে বৈষম্য। আমরা চাই, এ বৈষম্যের অবসান হোক।
এদিকে, মহাসড়ক অবরোধ করায় ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয় সংশ্লিষ্ট রুটের যাত্রীদের। চট্টগ্রাম থেকে আসা যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন করুক। তাতে আমাদের কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু, আমাদের চলাচলের পথও করে দিক। অনেক ব্যস্ততা নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছি। অনেকক্ষণ ধরে যানবাহনগুলো আটকে আছে। খুব কষ্ট হচ্ছে। ব্যক্তিগত কিছু কাজ দ্রুত সমাধান করতে হবে। দ্রুত যেতে না পারলে সমস্যা আরো বাড়বে।
এদিকে অবরোধস্থলে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা সদর সার্কেল কামরান হোসেন, কোতওয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ ফিরোজ হোসেন। তারা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদেরকে বুঝিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরানোর জন্য চেষ্টা করছি। আশা করছি তারা খুব দ্রুতই বিষয়টি বুঝবে ও মহাসড়ক অবরোধ না করে ক্যাম্পাসে ফিরে যাবে।